নাগরিকের পথচলা



অর্থ সংকটে চুপচাপ থাকতে হয়। কথা কম, শুনতে হবে বেশী। পকেট গরম থাকলে পকেটে হাত রেখে আঙুল নাড়ানোর নিয়ম আছে। কথায় কথায় বলতে হবে, টাকা পয়সা কোন ঘটনা না। নাগরিকের জন্য টাকা পয়সা কোন ঘটনা না। নাগরিকের আয়ও কম ব্যয়ও কম। তবে এই মুহূর্তে নাগরিক টাকার অভাব বোধ করছে। ইচ্ছে করছে দোতলা বাসে করে সদরঘাট থেকে গাজীপুর একটা ভ্রমন দিতে। ভাড়া নেয় সম্ভব নয়। দোতলা বাস গুলোতে ভাড়া বেশী নিচ্ছে। লোকাল বাসে দশ টাকা দিয়ে যে দূরত্ব যাওয়া যায়, দোতলা বাসে যেতে ভাড়া পড়বে কুড়ি টাকা। ভাড়া বেশির পেছনে কারণও থাকতে পারে। দোতলা করার জন্য রাজউকের অনুমোদন, প্ল্যান পাশ, বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি ইত্যাদি লাগে কিনা কে জানে। দোতলা বাসে ডেকোরেশন ভালো। ফ্যান আছে, বসে বসে কোমলমতি ফ্যানের বাতাস খেতে খেতে যাওয়া যায়। বাসের দোতলায় একেবারে সামনের আসনে বসতে নাগরিকের ভালো লাগে। দোতলার সামনে থেকে শহরকে দেখতে ভালো লাগে, মনে হয় সামনে গ্লাস লাগানো কোন বারান্দায় বসে আছে। সামনে গ্লাস না হয়ে খোলা থাকলে ভালো হত। ভবিষ্যতে এমনও হতে পারে, পুরো বারান্দা সিস্টেম। সামনে টেবিল থাকবে টেবিলে চা থাকবে, টোষ্ট বিস্কেট থাকবে। তখন হয়তো সাত টাকার ভাড়া সত্তর টাকা হবে বাঁ আরও বেশী। টোষ্ট বিস্কুটের কথা মনে পড়তেই নাগরিক পাখস্থলিতে টান অনুভব করল। ছোট বেলায় জব্বরের দোকানে এক টাকায় বড় টোষ্ট পাওয়া যেত, জব্বর এর নাম দিয়েছিল রোল। এক রোলে এক দুপুর কাটিয়ে দেওয়া কোন ঘটনা ছিল না। পকেটে পাঁচ টাকা আছে, পাঁচ টাকায় এক পিচ টোষ্ট বিস্কুট পাওয়া যাবে। শরীর কান্ত, টোষ্ট বিস্কুট আর এক গ্লাস পানি খেলেই ঝিমুনি ভাব চলে আসবে। আকাশে মেঘ জমেছে, বৃষ্টি আসবে আসবে প্রস্তুতি। শেষ সিগন্যালের অপেক্ষায়, সিগন্যাল পেলেই নেমে পড়বে। বৃষ্টি এলেই ঝিমুনি ভাব নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। বৃষ্টি সব ক্লান্তি দূর করে দেয়, সব ভেতরের ও বাহিরের।।